স্টাফ রিপোর্টার
সিলেট জেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি ও জকিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মাসুক উদ্দিন আহমদ জকিগঞ্জবাসীর জন্য আরেকটি গৌরব নিয়ে এসেছেন। তিনি শনিবার দুপুরে পুলিশ লাইন্সে শহীদ এসপি এম. শাসমুল হক মিলনায়তনে সিলেট জেলা পুলিশ আয়োজিত কমিউনিটি পুলিশং দিবসের অনুষ্ঠানে কমিউনিটি পুলিশং কার্যক্রমে অনবদ্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ শ্রেষ্ঠ কমিউনিটি পুলিশং সদস্য হিসেবে সম্মাননা স্মারক গ্রহন করেন। বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল এ কে এম শহীদুল হক বিপিএম, পিপিএম স্বাক্ষরিত এক সনদ ও সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদানের মাধ্যমে তাকে এ সম্মাননা প্রদান করা হয়। এবারে সিলেট জেলার মধ্যে একমাত্র তিনিই এ সম্মাননা অর্জনে সক্ষম হন। সম্মাননা প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন সিলেট বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম, সিলেটের পুলিশ সুপার মো. মনিরুজ্জামান, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী ও সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সভাপতি মুহিত চৌধুরীসহ সিলেটের বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
জানা যায়, বীরমুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মাসুক উদ্দিন আহমদ জকিগঞ্জ উপজেলার বিরশ্রী ইউনিয়নের পিয়াইপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৫ সালে স্কুল জীবন থেকেই তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৬৭ সালে বর্তমান সিলেট সরকারী কলেজ ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হন এবং পরে সিলেট সরকারী কলেজ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে এম.সি.কলেজ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৮/৬৯ এর আইয়ুব ইয়াহিয়া বিরুধী আন্দোলনে সিলেটে অগ্রনী ভুমিকা পালন করেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে ছাত্রলীগ নেতা মাসুক উদ্দিন আহমদ বঙ্গবন্ধুর ডাকে মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েন। ভারতের করিমগঞ্জে যুদ্ধ প্রশিক্ষন সমাপ্ত করে ইয়ূথ ট্রেনিং ক্যাম্পে নবাগতদের ট্রেনিং দিতে শুরু করেন। সেই সময় পুরো বাংলাদেশ থেকে প্রশিক্ষনের জন্য ১১৮ জনের মধ্যে একজন গর্বিত কমান্ডার হিসাবে তিনি মনোনিত হন। পরবর্তীতে ভারতের বিহার রাজ্য থেকে কঠোর প্রশিক্ষন শেষে বাংলাদেশের ৪ নং সেক্টরের বিভিন্ন সাব-সেক্টরের যুদ্ধে অংশগ্রহন করেন। ১৯৭১ সালের ২১ শে নভেম্বর এক সম্মুখ গেরিলা যুদ্ধের মাধ্যমে সিলেট জেলার জকিগঞ্জ স্বাধীন করেন মাসুক উদ্দিনের নেতৃত্বে তার সহযোদ্ধারা । তৎকালীন জকিগঞ্জ বেসামরিক প্রশাসন ও জননিরাপত্তার জন্য গঠিত শান্তি রক্ষা কোরের উপ-প্রধান হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে জানুয়ারী মাসের শেষের দিকে মাসুক উদ্দিন আহমদের নেতৃত্বাধীন কমান্ডোবাহীনী অস্ত্র সমর্পন করেন। স্বাধীনতার পর তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতি ছেড়ে বাংলাদেশ যুবলীগের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। যুবলীগের দীর্ঘ রাজনীতির পর তিনি আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে উঠেন। ১৯৭৫ সালের কালো রাত্রির পর সিলেট আওয়ামীলীগকে মূলধারায় করার কাজে বেশ ত্যাগ স্বীকার করেন। পরবর্তীতে আওয়ামীলীগ রাজনীতির দীর্ঘ ত্যাগের ফসল হিসাবে সিলেট জেলা আওয়ামীলীগের দপ্তর সম্পাদক, প্রচার সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসার পর তিনি জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটি, জেলা শিক্ষা কমিটি, প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ কমিটি, জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটি ও ব্যবসা সংক্রান্ত কমিটির সদস্য মনোনিত হলে সততা, দক্ষতা ও সচ্চতার সাথে আওয়ামীলীগ সরকারের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল রেখে আন্তরিকভাবে কাজ করেন। বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকারের আমলেও জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটি, সমাজকল্যান মন্ত্রনালয়ের অধীনে বয়স্ক মুক্তিযোদ্ধা ভাতা কমিটি ও মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রনালয়ের অর্ন্তভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটির সদস্য হিসাবে সততার সহিত কাজ করে যাচ্ছেন। বর্তমানে তিনি সিলেট জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ও কমিউনিটি পুলিশং সিলেট জেলা সমন্বয় কমিটির আহবায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া তিনি জালালাবাদ গ্যাস টিএন্ডটি এর পরিচালক হিসাবে বেশ কিছুদিন দায়িত্ব পালন করছেন ও ১৯৯০সালে জকিগঞ্জ উপজেলার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে জকিগঞ্জের উন্নয়নে অবদান রাখেন।
এ প্রসঙ্গে বীরমুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মাসুক উদ্দিন আহমদ বলেন, আমার সকল সাধনা মানুষের কল্যাণে। সে হিসেবে মানুষের কাজ করতে গিয়ে আমি জীবনে যেসকল সফলতা অর্জন করেছি তা আমি সেই সকল মানুষের প্রতি উৎসর্গ করি। এ ক্ষেত্রে আমার কোন চাওয়া পাওয়া নেই।
0 মন্তব্য:
Speak up your mind
Tell us what you're thinking... !