স্টাফ রিপোর্টার
জকিগঞ্জ উপজেলা জাতীয় পার্টিতে শেষ পর্যন্ত ক্ষোভের আগুন জ্বলে উঠেছে প্রকাশ্যে। সিলেট জেলা যুব সংহতির সাধারন সম্পাদক মরতুজা আহমদ চৌধুরীকে নিয়েই এ ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। জানা যায়, গত ৬ জুলাই সোমবার রাতে জকিগঞ্জ পৌর শহরের ইখওয়ান কমিউনিটি সেন্টারে জকিগঞ্জ উপজেলা ও পৌর জাপার ইফতার মাহফিল পূর্ব এক প্রস্তুতির সভার আয়োজন করা হয়। সভার পূর্ব মুহুর্তে পৌর যুব সংহতি নেতা সাহাব উদ্দিন ও জাতীয় পার্টি নেতা মকু মিয়া সহ বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী জেলা যুব সংহতির সাধারন সম্পাদক মরতুজা আহমদ চৌধুরীকে দেখে তাঁর নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয় তুলে ধরে হাতাহাতি শুরু করেন। এ সময় উপস্থিত জাপার সিনিয়র নেতাকর্মীরা পরিস্থিতি শান্ত করে নিয়ে আসেন। এতে মরতুজা আহমদ চৌধুরীসহ ৩ জন মৃদু আক্রান্ত হয়ে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা গ্রহণ করেন। জকিগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। দলীয় সূত্রে জানা যায়, দলীয় সংসদ সদস্য প্রদত্ব সরকারী বরাদ্ধগুলো বন্টনে দীর্ঘদিন থেকে মরতুজা আহমদ চৌধুরী অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি করে আসছেন। বিষয়টি ভালো চোঁখে দেখেননি উপজেলা জাতীয় পার্টির তৃণমূল নেতাকর্মীরা। তাঁরা মরতুজা আহমদ চৌধুরীর জকিগঞ্জে একক আধিপত্যের কারণে সময়ে সময়ে ক্ষোব্ধ হয়ে উঠেন। এছাড়াও তার উপর তৃণমুল নেতাকর্মীর রয়েছে নানা অনিয়ম ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ। তিনি টিয়ার, কাবিখা, কাবিটা, প্রকল্প নিয়ন্ত্রন করে আত্মসাৎ করেন ও ভূয়া কমিটি তৈরী করে বিল তুলেন বলে খোদ জাপা নেতাকর্মীদের দাবী। জাপা নেতাকর্মীরা মনে করেন, তার এসব কার্যকলাপে একাধিকবার দলীয় ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে। এদিকে এ ঘটনা পরদিন গত ৭ জুলাই মঙ্গলবার টিয়ার, কাবিখা, কাবিটা আত্মসাত্ব করে দলীয় ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার প্রতিবাদে জকিগঞ্জ ডাক বাংলোয় উপজেলা জাপার সহ সভাপতি আব্দুল মালেক মানইর সভাপতিত্বে এক প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা জাপার যুগ্ম আহবায়ক ও উপজেলা জাপার সাবেক সাধারণ সম্পাদক হেলাল আহমদ লস্কর। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা জাপার যুগ্ম আহবায়ক নাজমুল ইসলাম। অনান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন উপজেলা জাপার সাবেক সভাপতি আব্দুল জলিল, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক বুরহান উদ্দিন মুক্তা, জাপা নেতা মোস্তফা আহমদ মেম্বার, শামিম আহমদ মেম্বার, আতিকুর রহমান, জকিগঞ্জ ইউপি জাপার সাধারণ সম্পাদক সালেহ আহমদ সাবু, উপজেলা সেচ্ছাসেবক পার্টির সভাপতি বদরুল হাসান, জাপা নেতা কবিরুল হাসান, হোসেন আহমদ বছল, হোসেন আহমদ ও ওলিউর রহমান প্রমূখ। সভায় বক্তারা বলেন, দলীয় ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে মর্তুজা চৌধুরী টিয়ার, কাবিখা, কাবিটা লুটপাঠ করেছেন। প্রতিটি প্রকল্পে টাকা তাকে অর্ধেক না দিলে প্রকল্পের টাকা পাওয়া সম্ভব হয়না। সভায় বক্তারা আরও বলেন, মাদারনগর জামে মসজিদের উন্নয়নের ৬০ হাজার টাকা, হলদিরপার আশ্রমের ৬০ হাজার টাকা আত্মসাৎ ও শাজাপুর আশ্রমে ৬০ হাজার টাকার প্রকল্পে ১৫ হাজার টাকা প্রদান করা সহ নানা অনিয়ম ও নিজের মনোনিত লোক দিয়ে কমিটি তৈরী করে টিয়ার, কাবিখা, লুটপাট উন্নয়ন বাঁধাগ্রস্থ করে সাধারণ মানুষের কাছে দলীয় নেতাকর্মীদের তোপের মূখে ফেলেন। সোলার প্যানেল প্রকল্প বিভিন্ন মসজিদ, মন্দিরের বন্টনের কথা থাকলেও নিজের মনোনীত মানুষের মাঝে বন্টন করেছেন। সভায় বক্তারা, মরতুজা আহমদ চৌধুরীর অনিয়ম, লুটপাঠের তীব্র নিন্দা ও সুষ্ট তদন্তে দাবী জানান। এ ব্যাপারে মর্তুজা চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, তার জনপ্রিয়তা দেখে এক গ্রুপ ইর্ষান্বিত হয়ে তাকে অপমানিত করার জন্য সুপরিকল্পিতভাবে এসব করাচ্ছেন। ইফতার মাহফিলের প্রস্তুতি সভার প্রাক্কালে কতিপয় ব্যক্তি তাকে অপমানিত করার চেষ্ঠা করলে তিনি তাকে চড়-তাপ্পড় দেন। এর চেয়ে বেশী কিছু হয়নি বলে মরতুজা আহমদ চৌধুরী জকিগঞ্জ সংবাদকে জানান।
0 মন্তব্য:
Speak up your mind
Tell us what you're thinking... !