॥ মোঃ ইউনুছ আলী ॥
নতুন ভবনে যাত্রা শুরু করেছে জকিগঞ্জ প্রেসক্লাব। জকিগঞ্জে কর্মরত সংবাদকর্মীদের বহুল প্রত্যাশিত এ ভবন। আজ মনে পড়ে মরহুম মাওলানা আব্দুল মালিক আরিফের কথা। এই প্রেসক্লাব প্রতিষ্ঠায় তার ভূমিকা ইতিহাসে সোনার হরফে লেখা থাকবে। তিনি-ই অক্লান্ত পরিশ্রম করে ১৯৯৫ সালের ২৪ জানুয়ারী জকিগঞ্জ প্রেসক্লাব গঠন করেছিলেন। যদিও ১৯৯৪ ইংরেজীর ২৭ ডিসেম্বর একটি প্রেসক্লাব গঠনের উদ্দেশ্যে জকিগঞ্জ ডাক বাংলোয় প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়। তখন মাওলানা আব্দুল মলিক আরিফ সাহেবকে আন্তরিকভাবে সহায়তা করেছিলেন সর্বজনাব এম.এ.মালেক চৌধুরী, আব্দুল খালিক তাপাদার, মোঃ এখলাছুর রহমান, মরহুম মুজম্মিল আলী, আতিকুল হক, আবুল খায়ের চৌধুরী ও কমর উদ্দিন চৌধুরী প্রমূখ। আমার খুব খুশি লাগছে, প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাকালীন সহ সভাপতি মালেক ভাই সভাপতি ও প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য আবুল খায়ের চৌধুরী সাধারন সম্পাদক থাকাবস্থায় নতুন ভবন নির্মিত হলো। প্রত্যাশা করছি, প্রেসক্লাবের সভাপতি এম.এ.মালেক চৌধুরী সভাপতি থাকাবস্থায় নতুন ভবনের একটি কক্ষ "মাওলানা আব্দুল মালিক আরিফ" এর নামে নামকরণের। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে বিবেচনার জন্য প্রেসক্লাব সদস্যদের দৃষ্ঠি আকর্ষণ করছি। একথা বললে অত্যুক্তি হবেনা যে, আজ জকিগঞ্জে সাংবাদিকতার জয়জয়কার চলছে। জনাব আবুল খায়ের চৌধুরী, বদরুল হক খসরু, এখলাছুর রহমান, আব্দুল্লাহ আল মামুন, শ্রীকান্ত পাল, রহমত আলী হেলালী, এনামুল হক মুন্না, আহমদুল হক চৌধুরী বেলাল, অপূর্ব পাল, রিপন আহমদ, মোর্শেদ লস্কর, আবু বকর মোঃ ফয়সল ও আল হাছিব তাপাদারসহ আরো বেশ কিছু তরুণ সাংবাদিকতা পেশায় সক্রিয় আছেন। এটা শুভ লক্ষণ। প্রায় তিন বছর পূর্বে রহমত আলী হেলালীর সম্পাদনায় জকিগঞ্জের প্রথম সাপ্তাহিক পত্রিকা ‘জকিগঞ্জ সংবাদ’ প্রকাশিত হয়ে এ পর্যন্ত নিয়মিতভাবে বের হচ্ছে। পত্রিকাটি শুরু থেকেই ব্যাপক পাঠক প্রিয়তা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। জকিগঞ্জ সংবাদ প্রকাশের মাত্র এক বছরের মাথায় মোর্শেদ লস্করের সম্পাদনায় ‘জকিগঞ্জ-কানাইঘাটের ডাক’ নামে আরেকটি সাপ্তাহিক পত্রিকা এ উপজেলা থেকে যাত্রা শুরু করে। তাও আবার অনেকটা পাঠক প্রিয় হয়ে উঠলেও নিয়মিত প্রকাশ না হওয়াতে কিছুটা ভাটা পড়ছে। এছাড়া রহমত আলী হেলালী, এনামুল হক মুন্না, আব্দুল্লাহ আল মামুন, শ্রীকান্ত পাল ও মোর্শেদ লস্করের সম্পাদনায় পর্যায়ক্রমে পাঁচটি অনলাইন পত্রিকা জকিগঞ্জে থেকে যাত্রা শুরু করেছে। এ সকল অনলাইন পত্রিকাগুলো দেশ-বিদেশে অবস্থানরত জকিগঞ্জবাসীর নিকট ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। তবে সচেতন পাঠক হিসেবে আমরা লক্ষ্য করছি যে, যথেষ্ট যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও যথাযথ প্রশিক্ষণ ও চর্চার অভাবে অনেক সাংবাদিক বন্ধু পাঠযোগ্য সংবাদ রচনায় প্রত্যাশিত সফলতা দেখাতে পারছেন না। সংবাদ গুলোতে দেখা যায়, ভূল বানানের ছড়াছড়ি। একজন সংবাদকর্মীকে অবশ্যই একজন ভালো গদ্যশিল্পী হওয়া উচিত। জকিগঞ্জের সন্তান ছাব্বির আহমদ অপুর কথা কে না জানেন? বিদ্যুৎ গতিতে সে এগিয়ে গেল। একদম ধরাছোঁয়ার বাইরে। প্রত্যাশা করছি, একদিন সে জাতীয় প্রেসক্লাবের সদস্য হয়ে জকিগঞ্জবাসীর মুখ উজ্জ্বল করবে। তার লেখায় আর্ট ছিলো, কথায় আর্ট ছিলো। সে ছিলো ন¤্র. ভদ্র, বিনয়ী, অধ্যাবসায়ী ও প্রচন্ড মেধাবী। ছিলো নির্লোভ। হ্যামিলেনের বাশিওয়ালার ন্যায় সবাইকে কাছে টেনে নেওয়ার গুণই ছিলো তার চরিত্রের ভূষণ। আজকের তরুণ সংবাদকর্মীরা তাকে অনুস্মরণ করতেই পারেন। আমরা চাই ,প্রেসক্লাবকে ঘিরে শুরু হোক সৃজণশীলতার চর্চা। মনে রাখতে হবে, একজন দক্ষ গদ্যশিল্পী সার্থক সাংবাদিকও বটে। অতএব উদ্যোগটা নেওয়া উচিত শিগগিরই। এ ব্যাপারে প্রবীণরা এগিয়ে আসবেন -এই প্রত্যাশা রইলো।
লেখক- মোঃ ইউনুছ আলী, সদস্য-জকিগঞ্জ প্রেসক্লাব, সিলেট।
0 মন্তব্য:
Speak up your mind
Tell us what you're thinking... !