জকিগঞ্জে অতিতের চেয়ে এবার মহান মে দিবসে চোঁখে পড়ার মতো শ্রমিক সংগঠন গুলো তাদের অধিকার আদায়ের লক্ষে আলোচনা সভা ও র্যালী করেছে। বিগত বছরগুলোতে এত বেশী শ্রমিক সংগঠন আলোচনা সভা ও র্যালী করতে দেখা যায়নি। এ ধরণের উদ্যোগ শ্রমিকদের জন্য ইতিবাচক বলে মনে করি। আমরা চাই শ্রমিকদের ন্যায্য দাবী পূরণ হোক। তবে জকিগঞ্জের শিশু শ্রম একটি বড় সমস্যা। প্রবাদ আছে ‘শিশুরা শ্রমের হাতিয়ার নয়, শিশুরাই জাতির ভবিষ্যৎ’, ‘ঘুমিয়ে আছে শিশুর পিতা সব শিশুরই অন্তরে’, ‘শিশুদের হাতে ভিক্ষার থালা নয়-বই দেন কলম দেন’ ইত্যাদি। এই প্রবাদগুলো জকিগঞ্জের জন্য আজও খাতা-কলমে বন্দি রয়েছে। এনিয়ে কারও যেন কোন মাথা ব্যাথা নেই। অবশ্য প্রায় সময় জকিগঞ্জের সংবাদকর্মীরা এ উপজেলার সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের নিয়ে পত্রপত্রিকায় লেখা-লেখি করতে দেখা যায়। সাংবাদিকরা শিশুদের ঝুঁকি পূর্ণ কাজ থেকে বিরত রাখতে এবং শিশু কিশোরদের কাজে না নিতে সময়ে সময়ে নিরোৎসাহিত করে যাচ্ছেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছু হচ্ছে বলে দেখা যাচ্ছে না। আমাদের দেশে শিশুর অধিকার বিষয়ক আইন কাগজে কলমে থাকলেও প্রয়োগ হচ্ছেনা কোথাও। আজ জকিগঞ্জের প্রায় প্রতিটি বিভাগে চোঁখ বুলালেই দেখা মিলে শিশুদের বড় একটি অংশ তাদের শ্রম বিক্রি করছে। টেম্পো-বাসের হেলপার, ওয়েল্ডিং কারখানার কাজ, বিল্ডিং তৈরীর কাজ, হোটেল বয়, রিক্সা, ভ্যান, সিএনজি অটোরিক্সা, টমটম চালানো ও বাড়ী বাড়ী গৃহস্থলির কাজ সহ শত ঝুঁকি ও বিপদ জনক পেশায় নিয়োজিত রয়েছে এ উপজেলার শতশত শিশু। কাজ করতে গিয়ে এদের অনেকেই হাত-পা, চোঁখ হারিয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করছে। অনেকে নিজের অজান্তেই অসুস্থ হয়ে বেকার হয়ে বসে আছে। যে বয়সে শিশুদের কাঁধে থাকার কথা স্কুলের ব্যাগ সাথে খাতা, কলম ও বই। কিন্তু সেই কাঁধে আজ শ্রম বিক্রির হাতিয়ার আর সাথে কষ্টের বুঝা। শিশুদের এহেন দুরাবস্থার বিষয়টি আজ জকিগঞ্জের সচেতন মহলকে ভাবিয়ে তুলেছে। আজ শিশু বয়সে শ্রম বিক্রি করতে গিয়ে অভিভাবকহীন হয়ে অনেক শিশু সহজেই মাদকাসক্ত হচ্ছে। সময়ে সময়ে হয়ে উঠছে বড় ধরণের অপরাধী। তাইতো আজ জকিগঞ্জে একের পর এক ডাকাতির ঘটনা ঘটছে। আমরা মনে করি, সরকার অনতিবিলম্বে শ্রমিকদের ন্যায্য দাবী পুরণ এবং শিশু শ্রম বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করবে। আর আমাদের দীপ্ত শপথ হোক শিশু শ্রম রোধে অঙ্গিকার।
0 মন্তব্য:
Speak up your mind
Tell us what you're thinking... !