জাহানারা চৌধুরী ঝর্ণা
জকিগঞ্জ থেকে কালের বির্বতনে হারিয়ে গেছে উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের এক সময়ের জনপ্রিয় যোগাযোগ মাধ্যম ‘রেডিও সেট’। এখন আর কারো বাড়ীতে ‘রেডিও সেট’ দিয়ে সংবাদ, গান, নাটক বা অন্য কোন অনুষ্ঠান শুনতে দেখা যায় না। অথচ এক সময় জকিগঞ্জবাসী রেডিও সেটের মাধ্যমেই দেশের ও দেশের বাহিরের তাৎক্ষণিক সব খবর জানতো। দেশে বা দেশের বাহিরে বড় ধরণে কোন সমস্যা বা সম্ভাবনা দেখা দিলে গ্রামের মানুষ জটলা বেঁধে যার বাড়ীতে রেডিও রয়েছে সেখানে গিয়ে বিবিসি বা ভয়েস অব আমেরিকার সংবাদের দ্বারস্থ হতেন। তখন যার বাড়ীতে রেডিও সেট ছিল তিনি ছিলেন এলাকার প্রসিদ্ধ এক ব্যক্তি। তার বাড়ীতে রেডিও থাকার বিষয়টি হাট-বাজার থেকে শুরু করে পাড়া-মহল্লায় আলোচিত হতো। নব্বইয়ের দশক পর্যন্ত গ্রামের মানুষের নিকট রেডিও সেট ছিল জনপ্রিয় এক যন্ত্র। প্রতি সাপ্তাহের নির্ধারিত দিন ও সময়ে সিলেট বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারিত সিলেটের আঞ্চলিক ভাষার কৃষি বিষয়ক অনুষ্ঠান ‘শ্যামল সিলেট’ শুনতে শ্রোতাদের উপচে পড়া ভীড় থাকতো। এছাড়া জনপ্রিয় গানের জন্য সাপ্তাহের নির্ধারিত দিনে আয়োজন করা হতো ‘অনুরোধের আসর’। এ আসরে প্রতি সাপ্তাহে জকিগঞ্জের অনেকেই অংশ নিতেন। কেউ সত্যিই ভালো গান শুনার জন্য, আবার অনেকে নিজের নাম রেডিওতে প্রচারের জন্য অনুরোধ পাঠাতেন। শুধু তাই নয়, আবহাওয়া ও গুরুত্বপূর্ণ সংবাদের পাশাপাশি বিভিন্ন অনুষ্ঠান শুনতে মানুষ ব্যাকুল হয়ে থাকতো রেডিও সেটের দিকে। কিন্তু বর্তমানে ঠিক তার বিপরীত চিত্রটি দৃশ্যমান। আজ জকিগঞ্জের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে হারিয়ে গেছে ‘রেডিও সেট’। অত্যন্ত জনপ্রিয় এ যোগাযোগ মাধ্যমটি কালের বিবর্তনে ধীরে ধীরে নজরের বাইরে চলে গেছে। নতুন প্রজন্মদের কাছে রেডিও আশ্চার্যের ‘সেট’ বা ‘যন্ত্রে’ পরিণত হয়ে পড়েছে। তবে ‘রেডিও’ নামের পরিচিত সেই ‘সেট বা যন্ত্র’টি আপত:দৃষ্টিতে হারিয়ে গেলেও রেডিও’র বিকল্প হিসেবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সংযোজনে রেডিও’র সম্প্রচার এখন মানুষের হাতের মুঠোতে। আর তাই জনপ্রিয়তাও পাচ্ছে এফএম রেডিও এবং কমিউনিটি রেডিও’র সম্প্রচার। বাজারে অপ্রতুল্যতার কারণে ইতোমধ্যে সাধারণ ‘রেডিও সেট’ অনেকের কাছে দূষ্প্রাপ্য বস্তুতে পরিণত হয়েছে। অনেকেই আবার তাদের পুরাতন সেটটি সাজিয়ে গুছিয়ে রেখেছেন। কেউ কেউ পূর্বপুরুষদের স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে রেডিও সেট স্বযতেœ আলমারিবদ্ধ করেছেন। ‘চলুক’ বা ‘না-চলুক’ রেডিও সেটটি হাতছাড়া করছেন না অনেকে। নষ্ট হয়ে যাওয়ায় কিংবা বারংবার মেরামত করেও শোনার উপযোগি না হওয়ায় তাচ্ছিল্য করে ফেলে রেখেছেন কেউ কেউ। সময়োপযোগি অনুষ্ঠান সম্প্রচারে বেতারের ব্যর্থতার কারণে সাধারণ রেডিও সেটও আজ ব্যর্থতার দায় নিয়ে পিছুটান দিয়েছে বলে মনে করেন সচেতন মহল। পূর্বে শুধু রেডিওতে ব্যবহৃত হলেও বর্তমানে বেতার প্রযুক্তির ব্যবহার চলছে সর্বত্র। রেডিও (বেতার), টেলিভিশন (দূরদর্শন), মোবাইল ফোন, ইত্যাদিসহ তারবিহীন যেকোনো যোগাযোগের মূলনীতিই হল বেতার। বেতার তরঙ্গ ব্যবহার করে মহাকাশ পর্যবেক্ষণে ব্যবহৃত হয় বেতার দূরবীক্ষণ যন্ত্র বা রেডিও টেলিস্কোপ। বাংলাদেশে রেডিও’র রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম চলছে যেনতেন ভাবে। বেতারের অনুষ্ঠান শোনার জন্য নির্ভর করতে হয় ‘রেডিও সেটে’র ওপর। কিন্তু এফএমের যুগে ‘এএম’ উপযোগী রেডিও এখন পাওয়া যায় না। বিশ্বের কোনো দেশ ‘এএম’ প্রযুক্তির বিষয় মাথায় রেখে আর রেডিও বানায় না। ফলে সাধারণ মানুষের ইচ্ছা থাকলেও স্বাভাবিক ভাবেই রেডিও সেট চলে গেছে তাদের হাতের নাগালের বাইরে। দেশের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য তুলে ধরা এবং জনমানুষের সুস্থ চিত্তবিনোদনের প্রয়োজন মেটানোর এ মাধ্যমটি আজ হারিয়ে গেছে। এক্ষেত্রে সম্প্রচারমাধ্যম জনগণের প্রত্যাশিত ভূমিকা পালনে যেমন ব্যর্থ হয়েছে তেমনি সাধারণ রেডিও সেটের অপ্রতুল্যতাও অন্যতম কারণ। বিশ্বের কোটি কোটি অডিয়েন্সের বিশ্বস্থ গণমাধ্যম বিবিসি রেডিও’র সম্প্রচার যেমন আজো জনপ্রিয় ও প্রভাবশালী ঠিক তার বিপরীত চিত্রটি বেতারের ক্ষেত্রে। ফলে সাধারণ রেডিও সেট দিয়ে সাধারণ অনুষ্ঠানমালা বর্তমানে নিতে অপ্রস্তুত জকিগঞ্জের মানুষ। বেতারে এফএম (ফ্রিকোয়েন্সি মোডুলেশন) পুরোদমে চালু না হওয়ার কারণেও সাধারণ রেডিও সেটের জনপ্রিয়তা শূণ্যের কোঠায়। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই হারিয়ে গেছে এককালের জনপ্রিয় চিত্তবিনোদনের যোগাযোগ মাধ্যম ‘রেডিও সেট’। এ প্রসঙ্গে জকিগঞ্জের বারহাল ইউনিয়নের খিলগ্রামের সাংবাদিক আহমদুল হক চৌধুরী বলেন, আজ আমাদের গ্রামাঞ্চলে রেডিও খোঁজে পাওয়া কঠিন। কিন্তু এক সময় এ অঞ্চলে মানুষের নিকট রেডিও ছিল এক জনপ্রিয় যোগাযোগ মাধ্যম। জকিগঞ্জের কৃতি সন্তান আব্দুল হামিদ মানিক সিলেট বেতার কেন্দ্রে তখনকার সময়ে কর্মরত থাকায় এ উপজেলার অনেকে সহযোগিতা পেয়েছেন। এ বিষয়ে কোন কিছুর প্রয়োজন হলে আমরা চলে যেতাম মানিক ভাইয়ের কাছে। এছাড়া শ্যামল সিলেট অনুষ্ঠান ও অনুরোধের আসরে জকিগঞ্জের অনেকে নানা প্রশ্ন ও অনুরোধ নিয়ে হাজির হতেন। এ ছিল এক অন্য রকম মজা। আজ সেই মজা আর নেই। টেলিভিশন, মোবাইল ও ইন্টারনেট কেঁড়ে নিয়েছে সব কিছু।
জকিগঞ্জ থেকে কালের বির্বতনে হারিয়ে গেছে উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের এক সময়ের জনপ্রিয় যোগাযোগ মাধ্যম ‘রেডিও সেট’। এখন আর কারো বাড়ীতে ‘রেডিও সেট’ দিয়ে সংবাদ, গান, নাটক বা অন্য কোন অনুষ্ঠান শুনতে দেখা যায় না। অথচ এক সময় জকিগঞ্জবাসী রেডিও সেটের মাধ্যমেই দেশের ও দেশের বাহিরের তাৎক্ষণিক সব খবর জানতো। দেশে বা দেশের বাহিরে বড় ধরণে কোন সমস্যা বা সম্ভাবনা দেখা দিলে গ্রামের মানুষ জটলা বেঁধে যার বাড়ীতে রেডিও রয়েছে সেখানে গিয়ে বিবিসি বা ভয়েস অব আমেরিকার সংবাদের দ্বারস্থ হতেন। তখন যার বাড়ীতে রেডিও সেট ছিল তিনি ছিলেন এলাকার প্রসিদ্ধ এক ব্যক্তি। তার বাড়ীতে রেডিও থাকার বিষয়টি হাট-বাজার থেকে শুরু করে পাড়া-মহল্লায় আলোচিত হতো। নব্বইয়ের দশক পর্যন্ত গ্রামের মানুষের নিকট রেডিও সেট ছিল জনপ্রিয় এক যন্ত্র। প্রতি সাপ্তাহের নির্ধারিত দিন ও সময়ে সিলেট বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারিত সিলেটের আঞ্চলিক ভাষার কৃষি বিষয়ক অনুষ্ঠান ‘শ্যামল সিলেট’ শুনতে শ্রোতাদের উপচে পড়া ভীড় থাকতো। এছাড়া জনপ্রিয় গানের জন্য সাপ্তাহের নির্ধারিত দিনে আয়োজন করা হতো ‘অনুরোধের আসর’। এ আসরে প্রতি সাপ্তাহে জকিগঞ্জের অনেকেই অংশ নিতেন। কেউ সত্যিই ভালো গান শুনার জন্য, আবার অনেকে নিজের নাম রেডিওতে প্রচারের জন্য অনুরোধ পাঠাতেন। শুধু তাই নয়, আবহাওয়া ও গুরুত্বপূর্ণ সংবাদের পাশাপাশি বিভিন্ন অনুষ্ঠান শুনতে মানুষ ব্যাকুল হয়ে থাকতো রেডিও সেটের দিকে। কিন্তু বর্তমানে ঠিক তার বিপরীত চিত্রটি দৃশ্যমান। আজ জকিগঞ্জের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে হারিয়ে গেছে ‘রেডিও সেট’। অত্যন্ত জনপ্রিয় এ যোগাযোগ মাধ্যমটি কালের বিবর্তনে ধীরে ধীরে নজরের বাইরে চলে গেছে। নতুন প্রজন্মদের কাছে রেডিও আশ্চার্যের ‘সেট’ বা ‘যন্ত্রে’ পরিণত হয়ে পড়েছে। তবে ‘রেডিও’ নামের পরিচিত সেই ‘সেট বা যন্ত্র’টি আপত:দৃষ্টিতে হারিয়ে গেলেও রেডিও’র বিকল্প হিসেবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সংযোজনে রেডিও’র সম্প্রচার এখন মানুষের হাতের মুঠোতে। আর তাই জনপ্রিয়তাও পাচ্ছে এফএম রেডিও এবং কমিউনিটি রেডিও’র সম্প্রচার। বাজারে অপ্রতুল্যতার কারণে ইতোমধ্যে সাধারণ ‘রেডিও সেট’ অনেকের কাছে দূষ্প্রাপ্য বস্তুতে পরিণত হয়েছে। অনেকেই আবার তাদের পুরাতন সেটটি সাজিয়ে গুছিয়ে রেখেছেন। কেউ কেউ পূর্বপুরুষদের স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে রেডিও সেট স্বযতেœ আলমারিবদ্ধ করেছেন। ‘চলুক’ বা ‘না-চলুক’ রেডিও সেটটি হাতছাড়া করছেন না অনেকে। নষ্ট হয়ে যাওয়ায় কিংবা বারংবার মেরামত করেও শোনার উপযোগি না হওয়ায় তাচ্ছিল্য করে ফেলে রেখেছেন কেউ কেউ। সময়োপযোগি অনুষ্ঠান সম্প্রচারে বেতারের ব্যর্থতার কারণে সাধারণ রেডিও সেটও আজ ব্যর্থতার দায় নিয়ে পিছুটান দিয়েছে বলে মনে করেন সচেতন মহল। পূর্বে শুধু রেডিওতে ব্যবহৃত হলেও বর্তমানে বেতার প্রযুক্তির ব্যবহার চলছে সর্বত্র। রেডিও (বেতার), টেলিভিশন (দূরদর্শন), মোবাইল ফোন, ইত্যাদিসহ তারবিহীন যেকোনো যোগাযোগের মূলনীতিই হল বেতার। বেতার তরঙ্গ ব্যবহার করে মহাকাশ পর্যবেক্ষণে ব্যবহৃত হয় বেতার দূরবীক্ষণ যন্ত্র বা রেডিও টেলিস্কোপ। বাংলাদেশে রেডিও’র রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম চলছে যেনতেন ভাবে। বেতারের অনুষ্ঠান শোনার জন্য নির্ভর করতে হয় ‘রেডিও সেটে’র ওপর। কিন্তু এফএমের যুগে ‘এএম’ উপযোগী রেডিও এখন পাওয়া যায় না। বিশ্বের কোনো দেশ ‘এএম’ প্রযুক্তির বিষয় মাথায় রেখে আর রেডিও বানায় না। ফলে সাধারণ মানুষের ইচ্ছা থাকলেও স্বাভাবিক ভাবেই রেডিও সেট চলে গেছে তাদের হাতের নাগালের বাইরে। দেশের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য তুলে ধরা এবং জনমানুষের সুস্থ চিত্তবিনোদনের প্রয়োজন মেটানোর এ মাধ্যমটি আজ হারিয়ে গেছে। এক্ষেত্রে সম্প্রচারমাধ্যম জনগণের প্রত্যাশিত ভূমিকা পালনে যেমন ব্যর্থ হয়েছে তেমনি সাধারণ রেডিও সেটের অপ্রতুল্যতাও অন্যতম কারণ। বিশ্বের কোটি কোটি অডিয়েন্সের বিশ্বস্থ গণমাধ্যম বিবিসি রেডিও’র সম্প্রচার যেমন আজো জনপ্রিয় ও প্রভাবশালী ঠিক তার বিপরীত চিত্রটি বেতারের ক্ষেত্রে। ফলে সাধারণ রেডিও সেট দিয়ে সাধারণ অনুষ্ঠানমালা বর্তমানে নিতে অপ্রস্তুত জকিগঞ্জের মানুষ। বেতারে এফএম (ফ্রিকোয়েন্সি মোডুলেশন) পুরোদমে চালু না হওয়ার কারণেও সাধারণ রেডিও সেটের জনপ্রিয়তা শূণ্যের কোঠায়। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই হারিয়ে গেছে এককালের জনপ্রিয় চিত্তবিনোদনের যোগাযোগ মাধ্যম ‘রেডিও সেট’। এ প্রসঙ্গে জকিগঞ্জের বারহাল ইউনিয়নের খিলগ্রামের সাংবাদিক আহমদুল হক চৌধুরী বলেন, আজ আমাদের গ্রামাঞ্চলে রেডিও খোঁজে পাওয়া কঠিন। কিন্তু এক সময় এ অঞ্চলে মানুষের নিকট রেডিও ছিল এক জনপ্রিয় যোগাযোগ মাধ্যম। জকিগঞ্জের কৃতি সন্তান আব্দুল হামিদ মানিক সিলেট বেতার কেন্দ্রে তখনকার সময়ে কর্মরত থাকায় এ উপজেলার অনেকে সহযোগিতা পেয়েছেন। এ বিষয়ে কোন কিছুর প্রয়োজন হলে আমরা চলে যেতাম মানিক ভাইয়ের কাছে। এছাড়া শ্যামল সিলেট অনুষ্ঠান ও অনুরোধের আসরে জকিগঞ্জের অনেকে নানা প্রশ্ন ও অনুরোধ নিয়ে হাজির হতেন। এ ছিল এক অন্য রকম মজা। আজ সেই মজা আর নেই। টেলিভিশন, মোবাইল ও ইন্টারনেট কেঁড়ে নিয়েছে সব কিছু।
0 মন্তব্য:
Speak up your mind
Tell us what you're thinking... !