স্টাফ রিপোর্টার
জকিগঞ্জের বারঠাকুরী ইউনিয়নের খারিজা গ্রামের মৃত সোনাফর আলীর স্ত্রী বৃদ্ধা ‘সোনাবান বিবি’ হত্যাকাণ্ড নিয়ে এলাকায় চলছে তোলপাড়। কি কারণে, কেনইবা তাকে নিমর্মভাবে খুন হতে হলো তা নিয়ে স্থানরীয়রা আলোচনার ঝড় তুলেছেন। জানা যায়, গত ২৪ মার্চ মঙ্গলবার মধ্যরাতে ছেলের সাথে বসতবাড়ীতে যাওয়ার পথে বাড়ীর পুকুরপাড়ে দুর্বৃত্তদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর আহত হন সোনাবান বিবি (৭০)। পুরো রাত মৃত্যুযন্ত্রণায় ছটফট করলেও সকাল ৮টা পর্যন্ত তাকে উদ্ধার করেনি কেউ! পরদিন সকালে স্থানীয়রা দেখতে পেয়ে সোনাবান বিবিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তাররা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় নিহত সোনাবান বিবির ছেলে মানই মিয়া উরফে মালু গত ২৫ মার্চ বুধবার বাদী হয়ে জকিগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় আসামী করা হয় মুহাম্মদপুর গ্রামের নাজু আহমদ, শরীফ উদ্দিন, হাতিডহর গ্রামের শফিক আহমদ ও তিরাশী গ্রামের চিকন আলীকে। মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, তিনি তার মাকে নিয়ে নিজ গ্রাম খারিজা থেকে তিরাশিগ্রামের বসতবাড়িতে যাচ্ছিলেন। রাত ১টার দিকে তারা তিরাশীগ্রামের বসতবাড়ির পুকুরপাড়ে যাওয়া মাত্র আসামীরা তাকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আঘাত করতে চাইলে সাথে থাকা মা তাকে বাঁচানোর চেষ্ঠা করেন। এ সময় আসামীরা সোনাবান বিবিকে কয়েকটি কুপ দিয়ে মারাত্মক জখম করে। তবে সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ঘটনার সময় সাথে থাকা ছেলে মানই মিয়া উরফে মালু পালিয়ে গিয়ে কয়েক কিলোমিটার দূর হাসিতলা গ্রামে আশ্রয় নেয়। ফলে রাত ১ টায় সোনাবান বিবিকে কুপিয়ে জখম করা হলেও সকাল ৮টা পর্যন্ত তাকে কেউ উদ্ধার করতে আসেনি। এমনকি বাড়িতে থাকা পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও তাকে উদ্ধারে এগিয়ে আসেননি। এলাকাবাসীর নিকট পরিবারের এমন ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ? স্থানীয়রা জানান, সোনাবান বিবি রাতে আহত হয়ে সকাল ৮টা পর্যন্ত পুকুর পাড়ে পড়ে থাকলেও তাকে উদ্ধারে পরিবারের লোকজন এগিয়ে আসেনি। এমনকি তার সাথে থাকা ছেলেটিও মাকে উদ্ধারে না করে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরে হাসিতলা গ্রামে গিয়ে নীরবে বসে থাকাটাও রহস্যজনক। এছাড়া এত বড় একটি ঘটনা ঘটলেও তিরাশী গ্রামসহ আশপাশের কেউই কোন শোর চিৎকার না শুনাটাও রহস্য সৃষ্ঠি করেছে। স্থানীয় এক ব্যক্তি জানান, রাত ১টার দিকে ঘটনা ঘটলেও পরদিন সকাল ৮টা পর্যন্ত সোনাবান বিবি কথা বলছিলেন। এ সময় সোনাবান বিবির সাথে থাকা ছেলে মালুকে ফোন দিলে অন্য আরেক ব্যক্তি ফোন ধরেন। বিষয়টি সম্পূর্ণ রহস্যজনক বলে মনে হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে জকিগঞ্জ থানার ওসি (ইনচার্জ) সফিকুর রহমান খাঁন বলেন, সম্পূর্ণ ঘটনাটি রহস্যজনক বলে মনে হচ্ছে। তবে নিহতের একটি ভিডিও রেকর্ড আমাদের হাতে এসেছে। এই ভিডিও রেকর্ডের আলোকে আমরা আসামীদের ধরে হত্যার মূল রহস্য উদ্ঘটনের চেষ্ঠা করছি। বাদী অনেকটা সহজ সরল উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে রহস্য উদ্ঘাটন করা সম্ভব হয়নি।
0 মন্তব্য:
Speak up your mind
Tell us what you're thinking... !