আহমদুল হক চৌধুরী বেলাল
জকিগঞ্জ উপজেলার বারহাল ইউনিয়নের বালিটেকা গ্রামে সশস্ত্র ডাকাতি সংগঠিত হয়েছে। প্রতিরোধ করতে গিয়ে ডাকাতের গুলিতে প্রতিবেশী বাটইশাইল গ্রামের সাখাওয়াত আলী খাঁন (৬০) ও তার ছেলে বাবলূ খাঁন (৩৫) গুরুতর আহত হন। মঙ্গলবার দিবাগত রাত আড়াইটায় এ ঘটনাটি ঘটেছে। এলাকাবাসী জানান, রাত আড়াইটার দিকে ১৪/১৫ জনের মুখোশ পরা সশস্ত্র ডাকাত দল বালিটেকা গ্রামের সুলতান আলীর ছেলে প্রবাসী সমছু মিয়া ও বদরু মিয়ার বসতবাড়ীতে হানা দেয়। ডাকাত দল বসতঘরের কলাপসিবল গেইট ভেঙ্গে ভিতরে ঢুকে অস্ত্রের মুখে ঘরের লোকজনকে জিম্মি করে ফেলে। এ সময় ঘরে থাকা মহিলা ও শিশুরা চিৎকার দিলে ডাকাতদের হামলায় নাদিয়া, জামিলা, আলেছুর ও সুহাদা নামক ৪ জন আহত হন। পরে ডাকাতরা ঘরে থাকা প্রায় ৪০ভরি স্বর্ণ নগদ দেড় লক্ষ টাকা, মূল্যবান কাপড় চোপড় ও চারটি মোবাইল সেট নিয়ে পালিয়ে যায়। ডাকাত দল যাওয়ার পথে ঘরের লোকজন বের হয়ে ‘ডাকাত ডাকাত’ বলে চিৎকার দিলে গ্রামের লোকজন জড়ো হয়ে ডাকাত দলকে প্রতিরোধের চেষ্টা করে ব্যার্থ হন। বালিটেকা গ্রামের লোকজনের চিৎকার শুনে পার্শ্ববর্তী বাটইশাইল গ্রামের সাখাওয়াত আলী খাঁন, তার ছেলে
বাবলু খাঁন ও জিবু খাঁন বের হয়ে আসলে দেখতে পান ১৪/১৫ জন লোক ‘ডাকাত ডাকাত’ চিৎকার করে আসছে। তখন তারা ওই লোকজনের কাছে যেতে চাইলে তারা গুলি করে রাস্তায় ফেলে পালিয়ে যায়। তাৎক্ষণিক এলাকার লোকজন জড়ে হয়ে গুলিবিদ্ধ সাখাওয়াত আলী খাঁন ও তার ছেলে বাবলু খাঁনকে সিলেট এম.এ.জি.ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করেন। এ প্রসঙ্গে চিকিৎসারত সাখাওয়াত আলী খাঁন জানান, এলাকাবাসীর চিৎকার শুনে আমরা বের হলে দেখতে পাই একদল লোক ডাকাত ডাকাত চিৎকার করে আসছে। এ সময় আমরা তাদের কাছে যেতে চাইলে ডাকাতরা আমার পেটে ও কোমরের নীচে দুই রাউন্ড গুলি ছুড়ে। একই সাথে আমার ছেলে বাবলু খাঁনকে গুলি করলে হাতের বগল ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। গুলিবিদ্ধ বাবলু খাঁন বলেন, আমরা কিছু বুঝে উঠার আগেই ডাকাত দল গুলি করে পালিয়ে যায়। সাথে থাকা জিবু খাঁন বলেন, ডাকাত দল ‘ডাকাত ডাকাত’ বলে চিৎকার করায় এলাকাবাসী মনে করে কাছে যেতে চাইলে তারা গুলি ছুড়ে। ডাকাত দলের একের পর এক গুলিতে বাবা ও ভাই মাটিতে লুটে পড়লে উপায়ান্তর হয়ে আমি পালিয়ে যাই। ঘটনার পর পর পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে গুলির খোসা উদ্ধার করে। এলাকাবাসী এ ঘটনাকে স্মরণকালের দুর্ধর্ষ ডাকাতি বলে অভিহিত করেন। এনিয়ে এলাকার মানুষের মাঝে চরম আতংক বিরাজ করছে।
এদিকে সিলেট এম.এ.জি.ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তৃতীয় তলার ৯নং ওয়ার্ডের ৪০ নং বেডে চিকিৎসাধীন গুলিবিদ্ধ সাখাওয়াত আলী খাঁনের অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেও গুলিবিদ্ধ বাবলু খাঁনের অবস্থা আশংকাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক শংকর দাস। তিনি বলেন, বাবলু খাঁনের ডান হাতের বগলে থাকা সব ক’টি রগ গুলিতে ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। তাঁর হাত রক্ষা করতে হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে যেতে হবে। এ সময় হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন সিলেট জেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি ও জকিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ, সিলেট এম.এ.জি.ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চক্ষু বিভাগের সহযোগি অধ্যাপক ডা.এম.এ.আজিজ চৌধুরী, জকিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সাজনা সুলতানা হক চৌধুরী, সাপ্তাহিক জকিগঞ্জ সংবাদের প্রধান সম্পাদক রহমত আলী হেলালী, নির্বাহী সম্পাদক আহমদুল হক চৌধুরী বেলাল ও আহতদের পরিবারের লোকজন।
0 মন্তব্য:
Speak up your mind
Tell us what you're thinking... !