স্টাফ রিপোর্টার
জকিগঞ্জের কলাকুটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নির্যাতনকারী সেই শিক্ষিকা আয়শা বেগম (নাসিমা)’র বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা টিটন খীসা জানান, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা দেবব্রত দাস, বিআরডিবি কর্মকর্তা আব্দুল মুহাইমিন চৌধুরী ও উপজেলা সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তা বীরেন্দ্র চন্দ্র দাস সদস্য করে এই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। জানা যায়, গত ১০ ফেব্র“য়ারি মঙ্গলবার ‘পড়া না পারার’ অজুহাতে তার বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে হাসপাতালে পাঠান ঐ শিক্ষিকা। ইতিপূর্বে তিনি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জুতা পেটা করেছিলেন। লিখিত অভিযোগে কলাকুটা গ্রামের অভিভাবক মোস্তফা আহমদ উল্লেখ করেন- তার মেয়ে তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী শারমিন আক্তার শাহী, মাওলানা রিয়াজ উদ্দিনের প্রতিবন্ধী মেয়ে তাহমিনা আক্তারসহ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে ওই শিক্ষিকা পিটিয়ে ফুলা ছেচা যখম করেন। ব্যথায় শাহী কাঁদতে থাকলে কান্না থামানোর জন্য আয়শা কেগম দফায় দফায় তাকে মারধর করেন। শিক্ষিকার বেত্রাঘাতে আহত একাধিক শিক্ষার্থীকে স্থানীয় কালিগঞ্জ বাজারে চিকিৎসা দেওয়া হলেও শারমিন আক্তার শাহীকে জকিগঞ্জ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়। এ প্রসঙ্গে জকিগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক আব্দুল্লাহ আল মেহেদী জানান, প্রতিটি বেত্রাঘাতে তার পিট ফোলে রক্ত জমাট বেঁধে যায়। বিষয়টি জানতে পেরে জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় হুইপ ও সিলেট-৫ (জকিগঞ্জ-কানাইঘাট) আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব সেলিম উদ্দিন ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষিকার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গত ২১ ফেব্র“য়ারী শনিবার রাতে উপজেলা শিক্ষা অফিসার শফিকুল ইসলাম খাঁনকে নির্দেশ দিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে সেলিম উদ্দিন এমপি জকিগঞ্জ সংবাদকে বলেন, একজন শিক্ষিকার জন্য এ ধরণের এমন অমানবিক নির্যাতন কোন অবস্থাতেই আশা করা যায় না। আলাপকালে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ১০ ফেব্র“য়ারি ঘটনাটি ঘটলেও আজ অবধি কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা কেন গ্রহণ করা হয়নি। তাই জরুরী ভিত্তিতে অভিযুক্ত শিক্ষিকার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে বলে দিয়েছি। এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার শফিকুল ইসলাম খাঁন বলেন, এমপি মহোদয় আমাকে ফোনে এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলেছেন। তাই জরুরী ভিত্তিতে তদন্ত কমিটি সরেজমিন তদন্ত করবেন। তদন্ত শেষে ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কেননা ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে অতিতে এ ধরণের অভিযোগ রয়েছে। তদন্ত কমিটির সদস্য দেবব্রত দাস জানান, চলতি সাপ্তাহে কমিটির সদস্যবৃন্দ সরেজমিন ঐ এলাকায় যাবেন। সুষ্ঠু তদন্তে যা পাওয়া যাবে সে অনুসারেই প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে।
0 মন্তব্য:
Speak up your mind
Tell us what you're thinking... !