জাহানারা চৌধুরী ঝর্ণা
জকিগঞ্জ থেকে সময়ের ব্যাবধানে হারিয়ে যাচ্ছে পবিত্র মাহে রমযানের রোজা ইচ্ছাকৃতভাবে ভাঙ্গার সমাজিক বিচার। জানা যায়, মাত্র কয়েক বছর পূর্বেও জকিগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঈদের নামাজের পর খোঁজ নেয়া হতো কেউ রোজা ভাঙ্গছে কি না? ইচ্ছাকৃত রোজা ভাঙ্গার অভিযোগ কেউ অভিযুক্ত হলে স্বাক্ষ প্রমাণের ভিত্তিতে তার বিচার করা হতো। কাউকে কান ধরে উঠ বস আবার কাউকে জুতা গলায় দিয়ে চক্কর দেওয়ানোর মতো কঠোর শাস্তি প্রদান করা হতো। কিন্তু কালের পরিক্রমায় আজ তা আর শুনা যায়না। আনুগত্যের অভাবে এখন আর মুরব্বীদের এমন দুঃসাহস দেখাতে দেখা যায়না। অভিযোগ রয়েছে বর্তমান সময়ের অনেক নামধারী মুরব্বীরা পর্যন্ত ঠিক মতো রোজা রাখেন না। তরুণ ও যুবকরা তো স্বাধীন। যে যার মতো করে রোজা রাখছে আবার ভাঙ্গছে। অথচ আল্লাহ পাক রোজা পালনকারীদের জন্য যেমনি অনেক সওয়াব ও সম্মানের কথা ঘোষণা করেছেন। তেমনি ইচ্ছাকৃতভাবে পবিত্র রমযানের রোজা পালন করা থেকে বিরত থাকলে তার জন্য কঠোর শাস্তির কথা উল্লেখ করেছেন। ইচ্ছাকৃতভাবে একটি রোজা ভাঙ্গলে তার জন্য কাফফারা আদায় করার জন্য শরিয়ত নির্দেশ দিয়েছে। আর এ কাফফারাও বড় ধরনের। একটি রোজার জন্য কাফফারা হলো কোন প্রকার বিরতি ছাড়া ৬০ দিন লাগাতার রোজা রাখা। যদি কারো কাফফারার রোজা আদায়ের শক্তি না থাকে, তাহলে একটি ফরয রোজার জন্য ৬০ জন মিসকিনকে দু’বেলা পেট ভরে খাওয়াবে অথবা একজন মিসকিনকে ষাট দিন দু’বেলা করে খাওয়াবে। প্রত্যেক মিসকিনকে প্রত্যেহ এক সাদকায়ে ফিতরার পরিমাণ আটা বা গম দিবে অথবা আটা বা গমের দাম দিতে হবে। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, আগেকার দিনের মতো ইচ্ছাকৃত রোজা ভাঙ্গার এই সামাজিক বিচার না থাকায় নতুন প্রজন্মের ছেলে-মেয়েরা বেপরোয়া হয়ে উঠছে। কারণে অকারণে রোজ ভাঙ্গছে। ফলে অদূর ভবিষ্যতে পবিত্র রোজার তাৎপর্য্য ও মর্যাদা কতটুকু থাকবে তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। জকিগঞ্জ উপজেলার কামালপুর গ্রামের বয়োবৃদ্ধ তারা মিয়া বলেন, “ইতা খইয়া লাভ নাই, আগর আমলর মুরব্বী অখলও আছলা ভালা মানুষ। ফুয়া-ফাংড়াও আছলা ভালা। মুরব্বী অখলে কুচ্ছু কইলে মাথা ফাতিয়া তা মানতা। এখনকুর ফুয়াইনতরে কুচ্ছু খইলে উল্টা গদা লইলিব মুরব্বীর বায়। থানাত গিয়া কেইস করি দিব। অন্যদিকে এখনকুর মুরব্বী অখলর মাঝেও খাম কিয়ালী আছে”।
0 মন্তব্য:
Speak up your mind
Tell us what you're thinking... !