স্টাফ রিপোর্টার
জনপ্রিয় স্কুল শিক্ষক আব্দুল করীম হত্যার বিচারের দাবীতে উত্তাল হয়ে উঠেছে জকিগঞ্জের সর্বত্র। একের পর এক কর্মসূচী পালন করছেন বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার মানুষ। জানা যায়, হত্যার বিষয়টি পরিস্কার হওয়ার পর জকিগঞ্জ থানার ওসি মোঃ জামশেদ আলমসহ একদল পুলিশ সরেজমিন পরিদর্শনে গেলে গেছুয়া, বাদেজমা, ছয়গরি, মজলি, সিরাজপাড়া, হালগাট, তিরাশি, গঙ্গাজল ও ব্রাম্মণগ্রামের হাজারো জনতা শিক্ষক আব্দুল কারীম হত্যার বিচারের দাবীতে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। এ সময় তারা বলেন, যারা ঘটনাকে ধামাচাঁপা দেয়ার চেষ্টা করেছে তাদেরকে আইনের আওতায় আনতে হবে। উত্তরে ওসি জামশেদ আলম জনতার উদ্দেশ্যে বলেন, হত্যাকান্ডের সাথে যারা জড়িত তাদেরকে কোন ভাবেই ছাড় দেয়া হবে না। এদিকে গত ১১ জুলাই শুক্রবার শিক্ষক হত্যার বিচারের দাবীতে গণস্বাক্ষর কর্মসূচী পালন করেন এলাকাবাসী। ঐদিন বাদ জুমআ এলাকার সর্বস্তরের মানুষ স্বতস্ফুর্তভাবে স্বাক্ষর করেন। স্বাক্ষর প্রদানকালে এলাকাবাসী বলেন, একজন মানুষ গড়ার কারিগরকে এভাবে আপন সহোদর মেরে ফেলবে তা কল্পনা করা যায় না। এই হত্যাকান্ডে যারা জড়িত তাদেরকে গ্রেফতার করে বিচার নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া ঐদিন রাত ১০টায় শিক্ষক আব্দুল করিমের হত্যার মোটিভ উদ্ধারের দাবিতে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জামশেদ আলমের কাছে স্বারকলিপি প্রদান করেন এলাকাবাসী। গেছুয়া গ্রামসহ বিভিন্ন এলাকার প্রায় দু’শ ব্যক্তির স্বাক্ষরিত স্বারকলিপি প্রদানকালে রূপালি ব্যাংক বাবুর বাজার শাখার ব্যবস্থাপক ও গেছুয়া গ্রামের আতাউর রহমান, আওয়ামীলীগ নেতা নোমান উর রশীদ ও মাওলানা মামুনুর রশীদ প্রমূখ ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। স্বারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, শিক্ষক আব্দুল করিম ইন্তেকাল করেছেন বলে মসজিদের মাইকে জানানো হয়। এর পর তড়িগড়ি করে লাশ দাফন করায় লোকজনের সন্দেহ হয়। একজন সৎ, দক্ষ ও মেধাবী স্কুল শিক্ষকের মৃত্যুর খবরে এলাকাবাসী দারুন ক্ষোব্ধ ও মর্মাহত। তাই হত্যার মোটিভ উদ্ধার করতে তারা থানা পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবি করেন। অন্যদিকে গত ১২ জুলাই শনিবার শিক্ষক আব্দুল করীম হত্যার বিচারের দাবীতে জকিগঞ্জ সরকারী বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা স্কুলের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করে। শিক্ষার্থীরা নিহত স্কুল শিক্ষক আব্দুল করীমের খুনীদের বিচারের দাবীতে বিভিন্ন শ্লোগান সম্বলিত প্লেকার্ড প্রর্দশন করে। এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মাহিনুর রশীদ আকমাম, মোঃ আব্দুল হামিদ, মোস্তফা উজ জামান পাটোয়ারী শান্ত, পংকজ রায়, মোঃ আব্দুল্লাহ, মোঃ নাফি, নজরুল ইসলাম, ইমরান আহমদ, আব্দুর রহমান, ফাহিম, মহসিন, সিফাত, তুহিন, আবিদ ও তানভির। মানববন্ধন চলাকালে অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ সংহতি প্রকাশ করেন। অপরদিকে গত ১৩ জুলাই রোববার দুপুরে জকিগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি এক প্রতিবাদ সভার আয়োজন করেন। এতে সংহতি প্রকাশ করে অংশ নেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মাহতাব উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও সচিব দিলাল আহমদের পরিচালনায় প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন, জকিগঞ্জ সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক খলিলুর রহমান, সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক জামাল আহমদ, সহসভাপতি কুতুব উদ্দিন, প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি বিশ্বজিৎ রায়, প্রভাষক আল মামুন, শিক্ষক নেতা সিরাজ উদ্দিন, নমিক আহমদ, মহি উদ্দিন হায়দর, জ্যোতিষ চন্দ্র পাল, শিতাংশু বিশ্বাস, এনামুল হক, সুব্রত কুমার রায়, আব্দুস ছত্তার, প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুস শহীদ তাপাদার, সাবেক সভাপতি শফিকুর রহমান, কামরুল ইসলাম, রওশনারা বেগম, হারিছুন নাহার, আছমা বেগম, এলিজা বেগম ও পারভীন বেগম প্রমুখ। শহীদ মিনারে সভা শেষে শিক্ষকরা শহরের এম এ হক চত্ত্বরে দীর্ঘ মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করেন। পরে শিক্ষকরা জকিগঞ্জ থানার ওসি জামশেদ আলমের সাথে দেখা করে শিক্ষক আব্দুল করীম হত্যাকারীদের গ্রেফতারের দাবী জানান।
0 মন্তব্য:
Speak up your mind
Tell us what you're thinking... !