স্টাফ রিপোর্টার
জকিগঞ্জের উপর দিয়ে গত ২৭ এপ্রিল রোববার মধ্যরাতে বয়ে গেছে প্রচন্ড কালবৈশাখী ঝড়। ঝড়ের তান্ডবে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে জকিগঞ্জের প্রত্যান্ত এলাকা। বিধ্বস্ত হয়েছে শতশত ঘরবাড়ি। উপড়ে পড়েছে কয়েক হাজার গাছ পালা। জকিগঞ্জের প্রত্যান্ত অঞ্চল প্রায় এক সাপ্তাহ ধরে বিদ্যুতহীন। আবহাওয়া দফতর ঝড়ের সর্বোচ্চ গতিবেগ রেকর্ড করেছে ঘন্টায় ৮২ কিলোমিটার। বাংলা নববর্ষের শুরুতে এমন ঘুর্নিঝড়ে আতংকিত হয়ে পড়েন এলাকার সাধারন মানুষ। এ পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির পুরোপুরি হিসেব পাওয়া না গেলেও আনুমানিক কয়েক কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট মহলের ধারণা। জানা যায়, উপজেলার ১টি পৌরসভাসহ ৯টি ইউনিয়নের সব ক’টি গ্রামের প্রচুর পরিমাণে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সোমবার সকালে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, প্রায়ই রাস্তাঘাটে গাছ পালা উপড়ে পড়েছে বা ডাল পালা ভেঙ্গে পড়েছে। যার দরুন অনেক স্থানে পরিবহন চলাচল বন্ধের পাশাপাশি মানুষ চলাচল কষ্ট হয়ে পড়ে। রাস্তার পাশে এলজিইডি বা বিভিন্ন এনজিও কর্তৃক লাগানো গাছ ভেঙ্গে পড়ায় মানুষ বেশ বিপাকে পড়ে। স্থানীয়রা আইনী দিক বিবেচনা করে গাছগুলো না কাটায় চরম ভোগান্তির শিকার হন সংশ্লিষ্ট এলাকার লোকজন। তাৎক্ষণিক এলজিইডি কর্তৃপক্ষ বা এনজিওগুলো গাছগুলো কাঁটার ব্যবস্থা না করায় বিভিন্ন এলাকার লোকজন ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এছাড়া আকষ্মিক এই কালবৈশাখী ঝড়ে অসহায় ও হতদারিদ্র কয়েকশত মানুষের ঘরবাড়ি লন্ডভন্ড হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত সরকারী তরফ থেকে নুন্যতম কোন অনুদান পাননি বলে বেশ কয়েকজন ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ জকিগঞ্জ সংবাদকে জানান। বিশেষ করে এই কালবৈশাখী ঝড়ের তান্ডবে বিদ্যুতের ৮০টি খুটি ও অর্ধশতাধিকেরও বেশী কোসআর্মসহ অগণিত তার ছিড়ে পড়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন উপজেলার কামালপুর, জামুরাইল, বিরশ্রী, মইয়াখালী, পীরনগর, ভিঙ্গাইর বাজার, খলাছড়া, ডালুরপার, শাহগলি, বারহাল, শাহবাগ, কালিগঞ্জ, ফুলতলী, এওলাসার, সোনসার, উত্তরকুল ও বাবুর বাজারসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের লোকজন। এ সকল এলাকার লোকজন এক সাপ্তাহের অধিক সময় ধরে বিদ্যুতের আলো থেকে অন্ধকারে রয়েছেন। এ ব্যাপারে পল্লী বিদ্যুতের জকিগঞ্জ জোনাল অফিসের ডিজিএম আখতারুজ্জামান বলেন, কালবৈশাখী ঝড়ে সুপারী গাছ ও বাঁশ পড়ে বিদ্যুতের লাইনে পড়ে সীমাহীন ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। লাইনম্যানদের সাথে নিজে থেকেও এ পর্যন্ত প্রায় ৭০% মেরামত কাজ সম্পন্ন করেছি। এখনও ৩০% এর মতো মেরামত কাজ বাকি রয়েছে। আশা করি বাকি কাজ গুলো ২/৩ দিনের মধ্যে শেষ করতে সক্ষম হবো। জকিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) টিটন খীসা বলেন, জকিগঞ্জে কালবৈশাখী ঝড়ে প্রায় ২ কোটি টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতি গ্রস্তদের সাহায্যের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করেছি। অনুদান আসলে আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে তা পৌছে দেব।
0 মন্তব্য:
Speak up your mind
Tell us what you're thinking... !